জাতীয়টপ নিউজ

যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মারা গেছেন

স্টাফ রিপোর্টার :: দেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাবুল (৭৪) সোমবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।

বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানান যমুনা গ্রুপের সংবাদপত্র দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম।

মঙ্গলবার বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে যমুনা গ্রুপের পরিচালক ড. মো. আলমগীর জানিয়েছেন।

তিনি জানান, দাফনের আগে তার মরদেহ নেয়া হবে যমুনা ফিউচার পার্কে। সেখানে সীমিত পরিসরে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

গত ১৫ জুন জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে নুরুল ইসলাম বাবুল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। করোনায় তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ীর চিকিৎসায় এভার কেয়ারের ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহবুদের নেতৃত্ব ১০ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর বাইরে চীনের চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সিঙ্গাপুরের মাউন্ড এলিজাবেথ হাসপাতালের দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন।

দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা বাবুল স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বাবুলের স্ত্রী সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান জাতীয় সংসদের এমপি (সংরক্ষিত আসন) সালমা ইসলাম। ছেলে শামীম ইসলাম যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তার তিন মেয়ে- রোজালিন ইসলাম, মনিকা ইসলাম এবং সোনিয়া ইসলাম যমুনা গ্রুপের পরিচালক।

যমুনা গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পগ্রুপ। ১৯৭৪ সালে নুরুল ইসলাম বাবুল যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। মেধা, দক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার মাধ্যমে একে একে শিল্প ও সেবাখাতে গড়ে তোলেন ৪১টি প্রতিষ্ঠান।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে নুরুল ইসলাম একজন আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা। বর্তমানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছে এই যমুনা গ্রুপে।

এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক, যমুনা নির্মাণাধীন মেরিয়টস হোটেলসহ শিল্প ও সেবাখাতে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে গ্রুপটি। ইলেট্রনিক্স, বস্ত্র, ওভেন গার্মেন্টস, রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, বেভারেজ টয়লেট্রিজ, নির্মাণ এবং আবাসন খাতে ব্যবসায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই গ্রুপ।

সর্বশেষ করোনার চিকিৎসায় কুড়িলে ৩০০ ফিটের কাছে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে এর প্রাথমিক আলোচনাও শেষ করেছিলেন।

করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকার অনুদানও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও করোনা মোকাবিলায় সহজ ও সুলভ মূল্যে যমুনা তৈরি করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। গুণগত মানের দিক থেকে যমুনা গ্রুপ স্বাস্থ্যসম্মত পিপিই তৈরি করছে।

এদিকে, দেশের অন্যতম শীর্ষ এ ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে পৃথক শোক বার্তায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রীদ্বয় তাদের শোক বার্তায় মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়া সরকারের আরও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এই ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close
Close