উদ্যোক্তাদের খবরনারী ও শিশু

নিজেকে প্রমানের মধ্যমে এগিয়ে যাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার :: ৪ ভাই ৩ বোনের সংসারে আয়েশা আবদুর রব জমজম সবার ছোট। পড়াশোনা করেছেন ধানমন্ডি সরকারি গার্লস স্কুল এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে। আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করেন।

বাবা ছিলেন ডাক্তার, চেয়েছিলেন মেয়েকেও ডাক্তার বানাবেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আয়েশার অদম্য ইচ্ছে আলাদা কিছু করার। সেখান থেকেই আর্কিটেকচারে পড়াশোনা করা।

 

ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ার জন্য বুয়েটে চান্স না পেলেও, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ হয় উদ্যোক্তা আয়েশা আবদুর রব জমজমের। পরিবারের কেউই চাইলেন না মেয়ে আর্কিটেক্ট হোক।

পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি পরিবারকে না জানিয়ে বুটিকস আর পার্লারের কাজও শেখেন।

গ্রাজুয়েশনের আগে লুকিয়ে কাজ করতেন। চাকরিও করেছেন বিভিন্ন আর্কিটেক্ট ফার্মে। কিন্তু গ্রাজুয়েশন শেষ হবার পর চিন্তা করলেন, আমি আমার পেশাকেই হাইলাইট করবো।

ভাবনার কথা পরিবারকে জানালেন, পরিবারও বেশ উৎসাহিত করলো। তারপর চাকরির জমানো টাকায় শেয়ারে এক রুমের অফিস ভাড়া নিয়ে ছোটছোট প্রোজেক্টের কাজ শুরু করলেন।

২০১৩ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে ২ লক্ষ টাকা লোন এবং সাথে নিজের কিছু ইনভেস্ট দিয়ে ১৪০০ স্কয়ার ফিটের একটি জায়গায় শুরু করেন পার্লার এবং বুটিকস এর কাজ। পার্লারের নাম দেন ‘জমজম গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড’। পাশাপাশি আর্কিটেক্ট এর ছোটছোট প্রোজেক্টের কাজও করতে থাকেন।

২০১৪ সালে বিয়ে করেন উদ্যোক্তা আয়েশা আবদুর রব জমজম। স্বামী একজন ব্যবসায়ী। বড় ভাবী মা স্বনামধন্য কার্ডিওলজিস্ট ডা: নাজনীন সুলতানা রেবার সহযোগীতায় বনানীতে ৩০০০ স্কয়ার ফিটে ‘লিয়ানা কনসালট্যান্ট’ আর্কিটেক্ট ফার্মে আর্কিটেকচার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, প্লাম্বিং ইঞ্জিনিয়ার এরকম ৬ থেকে ৭ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেখানে মূলত আর্কিটেকচার, ইন্টেরিওর ডিজাইন, ল্যান্ডস্কেপ, কনস্ট্রাকশন এবং প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এর কাজগুলো করে থাকেন। দিনে দিনে কর্মী সংখ্যা বাড়তেই থাকলো।

একসময় সবকিছু মিলিয়ে নিজের শখের পার্লারটি আর টিকিয়ে রাখতে পারলেন না উদ্যোক্তা। তাতে অবশ্য ভেঙ্গে পড়েননি। একজন আর্কিটেক্ট হিসেবে তিনি মনোনিবেশ করলেন তার মূল পেশায়।

তারপর আর থেমে থাকেননি। এগিয়ে গিয়েছেন আপন গতিতে। নিজের কাজে ছায়ার মতো পাশে পেয়েছেন তার বড় ভাবী মা সনাম ধন্য কার্ডিওলজিস্ট ডা: নাজনীন সুলতানা রেবা ( কাডিওলজিস্ট, মেডিকেল অফিসার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)।

আজকে আমাদের আর্কিটেক্ট যমজম এই সফলতার ফিছনে সবচেয়ে বেশি যার অবদান তিনি হলেন এই ভাবী মা। ভাবী মায়ের সাহায্যে গড়ে উঠা জমজম এই সফলতার জন্য আমাদের অনেক শুভকামনা।

বর্তমানে ‘লিয়ানা কনসালট্যান্ট’ আর্কিটেক্ট ফার্মে ৫৪ জন কর্মী কর্মরত আছেন। ২ লক্ষ টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে তার ব্যবসা পরিচালনা করছেন উদ্যোক্তা আয়েশা আবদুর রব জমজম।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close
Close