এনজিওজাতীয়

শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য তামাক কর বৃদ্ধি চাই” – ডর্‌প মা সংসদ ভোলা থেকে মায়েদের দাবি

মা সংসদ হলো দরিদ্র মায়েদের অধিকার সংরক্ষণের একটি প্লাটফর্ম।  মা সংসদের মায়েরা মনে করছেন তামাক একটি সামাজিক ব্যধি, তাই মা সংসদ আসন্ন বাজেট ২০২১-২০২২ এ তামাক কর বৃদ্ধি করে আগামি প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জোর দাবি জানান।  তামাক পণ্যের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষনা  করেছেন ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে।

২০২১-২০২২ বাজেটে তামাক কর বৃদ্ধির জন্য মা সংসদের সুপারিশ:

১। সকল সিগারেট ব্রান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫%) মূল্যস্তরভিত্তিক সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, নিম্নস্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৩২.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; মধ্যমস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; উচ্চস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১১০ টাকা নির্ধারণ করে ৭১.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা নির্ধারণ করে ৯১ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।

২। ফিল্টারযুক্ত ও ফিল্টারবিহীন বিড়িতে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চূড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৪৫%) সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১১.২৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৯.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।

৩। জর্দা এবং গুলের কর ও দাম বৃদ্ধিসহ সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ (সম্পূরক) শুল্ক প্রচলন করা অর্থাৎ, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে ২৭.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক (৬০%) আরোপ; এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১৫.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক (৬০%) আরোপ করা।

মা সংসদ এর মায়েরা মনে করেন খোলা চিঠির প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১১ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে এবং ৮ লক্ষাধিক তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। তা ছাড়াও ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের সুযোগও রয়েছে। একই সাথে তামাক পন্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলে নতুন করে কিশোর ও যুব সমাজ তামাক ব্যাবহারে নিরুৎসাহিত হবে। অনেক দরিদ্র পরিবার সীমিত ক্রয় ক্ষমতার কারনে ধুমপান ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে।

মা সংসদ এর মায়েরা মনে করেন আরো উল্লেখ করেন হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির পারিবারিক আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হয় তামাকের পিছনে এক সার্ভে ২০১৮ এর তথ্য অনুযায়ী। অথচ তাদের মতো দরিদ্র জনগোষ্ঠি এই অর্থ তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও পুষ্টি চাহিদা মিটাতে পারতো। অধিকন্তু তামাক ব্যবহারের ফলে দরিদ্র পরিবারে দুরারোগ্য রোগ, ক্যান্সার, ফুসফুস সংক্রমক, হৃদরোগ, মুখ ও গলায় ক্যান্সার ও পাকস্থলির রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্যয়বহুল চিকিৎসা দরিদ্র পরিবারগুলোকে নিঃস্ব ও পরিবারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তির অকাল মৃত্যু পরিবারটিকে সর্বশান্তÍ করে দেয়।

ভবিস্যৎ প্রজন্ম রক্ষায় তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট কর আরোপের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি করে সকল তামাকজাত পণ্যকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, কিশোর ও যুব সমাজের ক্রয়সীমানার বাইরে নিয়ে যাওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন মায়েরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close
Close